হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা শইফতপাড়া গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গেছে টাঙ্গন নদী ও একটি নজরকাড়া ব্রীজ । নদীর দুই ধারে প্রকৃতি সেজেছে যেন এক নৈসর্গিক সাজে। একদিকে নদীর কলতান অন্যদিকে কাঁশফুলের সৌন্দর্য নজর কাড়ছে প্রকৃতি প্রেমিদের। পাশ দিয়ে গেলে কেউ চোখ ফেরাতে পারেনা সেই প্রকৃতির রূপ-লাবণ্যে। বামন শ্মশান ঘাটের পাশেই নদীর ধারে জন্মানো সাদা কাঁশফুলের কোমল শুভ্রতা ছড়াচ্ছে প্রকৃতিতে। আর আকাশের সাদা মেঘের সঙ্গে বাতাসে দোল খাওয়া কাঁশফুল ও নদীর স্নিগ্ধ-শান্তরূপ আকৃষ্ট করছে ছোট বড় সকলকে। প্রভাতের স্নিগ্ধ আলো আর গোধূলি লগ্নের আগ মহূর্তে মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে কাঁশবন সমৃদ্ধ ওই এলাকাটি। এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ পরিবার, পরিজন,বন্ধু-বান্ধব এসে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ছবি তোলা নিয়ে। এমন সৌন্দয্য দেখে কেউ যেন নিশ্চুপ থাকতে পারেনা অস্থায়ী এই প্রাকৃতিক রূপ-লাবণ্যে দেখে। এসময় সকলে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন ছবি তুলাতে।
ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের সরকার পাড়া মহল্লার বাসিন্দা ইব্রাহীম আলম বলেন, ‘ব্যবসার কাজে খুবই ক্লান্ত লাগছিল ও মনটাও খারাপ ছিল। আমার ছোট ভাইয়ের কাছে শুনে এখানে একটু ঘুরতে আসলাম। এসে দেখি এখানে অনেক মানুষের ভীড়। নদীর ধারে এই কাঁশফুলের বাগানে ঘুরে মনটা ভরে গেল ও প্রকৃতির এমন রূপ দেখে খুব প্রশান্তি অনুভব করছি। উপজেলার রুহিয়া থানা এলাকার চামেশ্বরী গ্রামের রহিমুল ইসলাম বলেন মানুষের মুখে শুনে এখানে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি কি চমৎকার এক দৃশ্য যা দেখে মন কেড়ে নিল। এক সময় অনেক কাশবন দেখা যেতো, এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। সূর্যের আলো যখন কাঁশফুলের উপরে পরে তখন আরও অপরুপ সৌন্দয্যে নন্দিত হয়।
ফারাবাড়ি বাজার এলাকার স্থানীয় লিঙ্কন নামে এক যুবক বলেন, ‘মূলত এখানে প্রকৃতি দর্শন ও ছবি তোলার জন্য আসা। এখানে অনেক মানুষ দেখতে আসছে ভালো কিন্তু অনেকে কাঁশফুলের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। ফুল গুলো ছিড়ে ও ভাঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে এটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। কেউ যদি এমনটা না করে তাহলে এর সৌন্দর্য ভালো থাকবে। স্থানীয় যুবক অনিক চন্দ্র বর্মন বলেন, এটি আমাদের ফারাবাড়ি বাজারের বামন শ্মশান ঘাটের পাশে অবস্থিত। এই কাশবনটির কিছু দূরে আরেকটি কাঁশবন হয়েছিল সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন কয়েদিনের মধ্য দেখি এখানে কাশফুলে ভরপুর হয়ে সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। তাই অনেক দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন। আগে আমাদের এই দিকে এমন কাঁশবন দেখা যেতো না। একই এলাকার আরেক যুবক অনিমেষ চন্দ্র দর্শণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন যারা এখানে দেখতে ও ঘুরতে আসছেন আপনারা এই ফুলগুলো না ছিড়ে প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্যকে রক্ষা করুন। আচকা ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন বলেন, এটি খাস খতিয়ান ভুক্ত জমি। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা এটিকে রক্ষার চেষ্টা করবো। কাশবনটি যাতে নষ্ট না হয় বা কেউ কেটে নিয়ে যেতে না পারে।
শরৎকে বলা হয় নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অনন্য ঋতু। আর এই শরৎ এ প্রাকৃতিকভাবে জন্মে উঠা লম্বাটে সবুজ গড়নের কাঁশবনের গাছের ডগায় ফুটন্ত কাঁশফুল নজর কাড়ে যে কারোর। তেমনি এই নদীর ধারের সাদা কাঁশফুলের শুভ্রতা ও নদীর কলতানে বিমুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতি প্রেমিরা। এতে এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকে৷ সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র চোখে পড়ে।