ইয়ানূর রহমান, যশোর প্রতিনিধি :
যশোরের শার্শা পুলিশের নাকের ডগায় মাদক সম্রাট মাসুমের মাদক ব্যবসা বেপরোয়া গতিতে চলছে। এ গুরুতর অভিযোগ উপজেলা পরিষদের আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং ও থানা পুলিশের একাধিক সুত্র হতে থেকে পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডজন খানেক মাদক মামলা মাথার উপর ঝুলছে শার্শার দক্ষিন বুরুজ বাগান গ্রামের মাসুমের। সে গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে আস্তানা গড়ে মাদকের কারবার দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। নাভারন রেল স্টেশন এলাকার বিশেষ ব্যক্তির বােনের মেয়ের জামাই বলে এলাকাবাসী তাকে জামাই মাসুম বলে বর্তমানে চিনে। সে সবাইকে ম্যানেজ করে মাদক বিক্রি করে। তারা বলেন, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারি সংস্থ্যার সদস্যদের ম্যানেজ করেই নাভারনের কমপক্ষে ১০টি স্পটে প্রকাশ্যে মাদক দ্রব্য নির্বিঘ্নে সাপ্লাই দিয়ে বিক্রি করছে। তার সাপ্লাই ম্যানের মধ্যে রয়েছে দক্ষিন বুরুজ বাগান গ্রামের কুখ্যাত অস্ত্র ব্যবসায়ি রবি, মন্টু, সাকিব,রাকিবুল, আগুন, তাজিম, শুভ, চঞ্চল সহ অনেকে। মাদক সম্রাট মাসুমের জমজমাট মাদক ব্যবসার কারনে এলাকার যে কোনো স্থানে হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা, হেরোইন ও ইয়াবা।
এলাকায় মাদক বিক্রি হওয়াটা এখন স্বাভাবিক বলে মনে করে অনেকেই। এ ব্যাপারে কোনো রাখঢাকও নেই। সুর্য উঠার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তাঘাটে পাড়া মহল্লায় মাদক ঘুরে ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করছে এমন অভিযোগ করেন অনেকে।
সচেতন মহলের অভিযোগ, গ্রামের কমপক্ষে ১০টি স্পটে গাঁজা, হেরােইন ও ইয়াবার বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এখন এলাকার বড় ভাইদের ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে নাকি মাসিক চুক্তি করে মাসুম মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। এই চক্রের মাদক ব্যবসার শেল্টারদাতা নাকি অনেক প্রভাবশালী নেতারা। এদের মধ্যে বিরোধী ও সরকারী দলীয় নেতাদেরও নাম রয়েছে। এ সকল প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চক্রটি নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে মাদক বিক্রি করে থাকেন। মাদক সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার উঠতি বয়সী তরুণদের সঙ্গে কিছু সংখ্যক তরুণীও সর্বনাশী নেশার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ইদানিং মাদকাসক্ত পরিস্থিতিটা নাভারন এলাকায় ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আমাদের প্রতিবেদককে জানান, শার্শার নাভারন এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবা সয়লাব হলেও এগুলো দেখার কেউ নেই। যারা বন্ধ বা প্রতিরোধ করবে তারাই এ ব্যবসায়ীদের সাথে জড়িত হয়ে নিরব ভুমিকা পালন করছে। এ মরণনেশা মাদকে দিন দিন এলাকার তরুণরা আসক্ত হচ্ছে। মাদক সেবনকারীদের উৎপাতের কারণে এলাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে চুরি, ছিনতাই, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড। ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে এদানিং কয়েকজন মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করলেও বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। বরং দিন দিন এলাকায় মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত যুবক ও তরুণরা যোগ দিচ্ছে মাদক সেবনের সাথে ব্যবসায়ও।
এ ব্যাপারে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বারবার মাদক ব্যবসায়িদের নামের তালিকা দিলেও কাজ হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক জানান,
মাদক বিক্রি বন্ধে প্রশাসনকে সাথে নিয়ে আমরা সবাই চেষ্টা চালাচ্ছি। সকলে সহযোগিতা করলে হয়তো শীগ্রই দমন করা সম্ভব হবে।