প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার (২৮ আক্টোবর) চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করবেন। ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
তাইতো দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিভিন্ন সড়ক সেজেছে বর্নিল রূপে। চারদিকে সাজ সাজ রব। সাঁটানো হয়েছে নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুন। চট্টগ্রামজুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরি টানেল দূরত্ব কমাবে চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের। গতি বাড়বে বাণিজ্য, শিল্পায়ন ও উন্নয়নের। কমবে পরিবহন ব্যয়, সাশ্রয় হবে সময়ের। যা যোগাযোগে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করবে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য দেবেন। এ উপলক্ষে নৌকার আদলে প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ। জনসভার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বিশাল মাঠ। আশপাশে সাজসজ্জার কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
জনসভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা দফায় দফায় জনসভাস্থল পরিদর্শন করছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, জেলায় ঐতিহাসিক উন্নয়ন উপলক্ষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এখানে জনসভা হবে। আমরা আশা করছি, এটি স্মরণকালের সেরা জনসভা হবে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহের হোসেন বলেন, জনসভাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। নেত্রী সেখানে যাবেন, নৌকার কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, টানেলের হওয়ায় আমাদের নেত্রীর জনসভায় দল মত নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করবে। আশা করি, এটি স্মরণকালে সেরা জনসভা হবে।
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। চার লেন বিশিষ্ট দুটি টিউবের প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। গত বছরের ২৬ নভেম্বর টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের একটি টিউবের পূর্তকাজের সমাপ্তি উদযাপন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ছাড়া মূল টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ফ্লাইওভার থাকবে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। পরে তা বেড়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা দিচ্ছে। বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।