তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জোর না দিয়ে বিএনপির আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বনানীর নিজ বাসভবনে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নিজের অবস্থান তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমাদের (বিএনপি) অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) আহ্বান জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় দেওয়ার জন্য। কারণ, তখন আওয়ামী লীগের অত্যন্ত লেজেগোবরে অবস্থা ছিল। কখন এমন ধরনের আহ্বান জানায়? যখন অবস্থা লেজেগোবরে থাকে। এখন কি এমন আহ্বান জানায়? কিন্তু আমরা তখন সেই অবস্থার ফায়দা নিতে পারিনি। এর ফলে আমরা সেই যে রাজপথে গিয়েছি এখনও সেখানেই আছি।
তিনি বলেন, ২৩ বছর আমি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। ড. মোশাররফ ও রফিকুল ইসলাম মিয়া ছাড়া সবাই আমার জুনিয়র । কিন্তু আমি ছাড়া সবাই উপরে উঠে গেছে। আমি পদবীর জন্য রাজনীতি করি না। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দলে যোগদান করেছি। বেগম জিয়ার অনুপুস্থিতিতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জুনিয়র নেতারা সিনিয়র পদপদবী পেলেও কোন অভিযোগ নেই। শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে নিস্ক্রিয় আছি। রাজনীতিতে এখন কোন আগ্রহ নেই।
মেজর হাফিজ বলেন, ২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর এ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় আজগুবি ১১ টি অভিযোগে। সরকার বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ না নিলেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিন বছর পার হলেও নোটিশের উত্তরের কোন পাল্টা জবাব পাইনি। ৩১ বছর রাজনীতি করে এমন প্রাপ্তি পীড়াদায়ক।
দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেক ভুল আমরা করেছি। দলীয় বলার সুযোগ নাই। ৮ বছর কোনো কাউন্সিল হচ্ছে না। জাতির স্বার্থে কিছু কথা বলতে হয়। দলের সব নেতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কথা বলা। বিএনপিতে একটি সত্যি কথা বলা লোক চোখে পড়েনি সাইফুর রহমান ছাড়া । সবাই ইয়েস স্যার, রাইট স্যার ,বলা লোক ।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে শারীরিক কারনে অংশ নেয়া সম্ভব নয়। জনগণের সাথে কথা বলে রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়ার চেষ্টা করবো।
মেজর হাফিজ বলেন, বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিৎ। কেয়ারটেকারের কথা না ভেবে বিকল্প ভাবা উচিৎ। জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিৎ। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের সক্ষমতা লাগে তা নেই বিএনপির। বিএনপির আন্তর্জাতিক যোগাযোগ দুর্বল।
সরকারে সমালোচনা করে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। জনগণ সুযোগ পেলে সঠিক বিচার করে। ক্ষমতাসীনরা মনে করে উন্নয়ন কাজে ভোট পাবে। আসলে মানুষ বিচার করে নিত্যপণ্যের দাম, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় শুধু উন্নয়ন কাজে ভোট হয় না।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, অনুগ্রহ করে সামাজিক সম্প্রীতির দিকে লক্ষ্য রেখে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করুন। কারণ, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না।