বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:
দুই বছরের শিশুকন্যা সহ তাদের সংসার। কৃষক স্বামী জীবিকার তাগিদে কৃষি জমিতে গেলে এ সুযোগে গৃহবধূর আপন চাচাতো ভাই প্রতিবেশী মো. শাহীন (৪০) ঘরে ঢুকে শিশুকন্যাকে গলা টিপে হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে আবারও ওই চাচাতো ভাই ভয়ভীতি দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিলে গৃহবধূ (২০) সকল ঘটনা তার স্বামীকে জানায়।
গত ২০ অক্টোবর ভোরে গৃহবধূর স্বামী জমিতে কাজ করতে যাওয়ার আগে ঘরের সিলিং এর কোনে মোবাইল ফোনে ভিডিও সিস্টেম চালু করে রেখে যায়। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চুপিসারে ঘরে ঢোকে ওই লম্পট চাচাতো ভাই এবং স্ত্রীকে আবারও জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে চিৎকার দিলে স্বামী এসে ধর্ষককে আটক করে। কিন্তু ধর্ষক শাহীন কাঠের বাটাম দিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পরের দিন ওই ভিডিও ফুটেজ সহ গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও দীর্ঘদিনেও থানা এ মামলা নথিভুক্ত করেনি। পরে বাধ্য হয়ে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে অভিযুক্ত মো. শাহীন এর বিরুদ্ধে গত ২২ অক্টোবর নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা দায়ের করে। আদালত মামলাটি তদন্তপূর্বক রিপোর্ট পেশ করার জন্য নাটোর পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)কে নির্দেশ দেয়। অভিযুক্ত শাহীন উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের হালদারপাড়ার আব্দুস সামাদের ছেলে। সে পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি।
ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ জানান, গত ৭ অক্টোবর সকাল ৭টার দিকে তার আপন চাচাতো ভাই শাহীন তার শোবার ঘরে ঢুকে পড়নের কাপড়-চোপড় ছিড়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে তার একমাত্র শিশুকন্যাকে গলাটিপে হত্যা করবে বলে ভয়ভীতি দেখায় এবং পরবর্তীতে ২০ অক্টোবর আবারও সে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। শাহীন এই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ও হুমকী দিয়ে আসছে। নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে বলেও জানায়।
শনিবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই এর উপ-পরিদর্শক হৃদয় সরকার শাকিলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ ও প্রাসঙ্গিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।