কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রেমিকের সাথে দেখা করতে এসে বখাটে যুবকদের ধর্ষনের শিকার হয়েছেন এক কিশোরী (১৪)। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে শনিবার (১১ নভেম্বর) উলিপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় মামলার চব্বিশ ঘন্টা পেড়িয়ে গেলেও পুলিশ কোন আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের রাজারাম নামক এলাকায়।
কিশোরীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর পূর্বে উলিপুর পৌরসভার নাওডাঙ্গা এলাকার শুধান চন্দ্র রায়ের ছেলে শান্ত চন্দ্র রায় (২০) এর সাথে রংপুর (পীরগাছা) এলাকার ওই কিশোরীর গ্রামে উৎসবের সময় (দূর্গাপুজা) উভয়ের পরিচয় হয়। সেই থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। গত সোমবার (৬ নভেম্বর) ওই কিশোরী বাবা-মায়ের সাথে নানার বাড়ি উলিপুরে (ধামশ্রেনীতে) বেড়াতে আসেন। নানার বাড়িতে থাকাকালীন সময় শান্ত চন্দ্রের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। এরপর শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বিকালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিক শান্ত পৌরসভার নাওডাঙ্গা নামক বিলে ওই কিশোরীকে কৌশলে ডেকে নেয়। তারপর তারা দুজন ওই এলাকায় অবস্থান করেন। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর অটোরিক্সা যোগে অজ্ঞাত স্থানে যাওয়ার সময় ওই এলাকার কয়েকজন বখাটে যুবক তাদের পথরোধ করে কৌশলে শান্তকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।
ওই বখাটের দল কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক অপহরন করে পাশ্ববর্তী দলদলিয়া ইউনিয়নের রাজারাম এলাকার নির্জন জায়গার একটি সেচ পাম্পের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষন করা হয়। ধর্ষনের ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে কিশোরীকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর কিশোরী কাঁদতে কাঁদতে ঘটনাস্থলের পাশ্ববর্তী বাকরেরহাট বাজারের এসে স্থানীয়দের বিষয়টি জানান। এ সময় স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
ভিকটিমের স্বজনরা জানায়, কাউকে কিছু না বলে ঘটনার দিন বিকালে ওই কিশোরী বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর সবাই তার খোঁজ করতে থাকেন। পরবর্তীতে ওই দিন রাত এগারো টার পর তারা জানতে পারেন তাদের মেয়ে থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। পরে তারা ছুটে এসে এই নির্মম পৈচাশিক ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারেন। এ ঘটনায় পরদিন শনিবার (১১ নভেম্বর) কিশোরীর মা বাদী হয়ে শান্ত চন্দ্রসহ নামীয় চারজন ও অজ্ঞাতনামা দুইজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এদিকে মামলার চব্বিশ ঘন্টা পেড়িয়ে গেলেও পুলিশ কোন আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে জানা গেছে।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মর্তুজা জানান, ধর্ষনের ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। শনিবার (১১ নভেম্বর) কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পূর্ণ করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।