মোঃ আব্দুস সালাম-চিরিরবন্দর ( দিনাজপুর ) প্রতিনিধি :
চিরিরবন্দরে ভারত থেকে আসা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনের পাইপ ফুটো করে তেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করছেন চিরিরবন্দর থানার পুলিশ। এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলের দিকে ৪ জনকে আটক করা হয়।
সকালে চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের চক ইসবপুর এলাকায় পাইপ লাইনে বিশেষ কায়দায় ফুটো করে তেল চুরির বিষয়টি জানতে পারে সংশ্লিষ্টরা ।
তেল চুরির খবর পেয়ে দুপুরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাকিল আহমেদ, চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম শরীফুল হক চিরিরবন্দর থানার ওসি মোঃ বজলুর রশিদ সহ বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপ লাইনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তেল চুরির অভিযোগে আটকরা হলেন- চিরিরবন্দরের উত্তর-ভবানীপুর (ডাঙ্গারহাট) গ্রামের আলী উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৭), পার্বতীপুর উপজেলার সোনাপুকুর গ্রামের মাজুম আলীর ছেলে মানিক শাহ (৪৫), নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার সাশকান্দর গ্রামের মৃত তাবির উদ্দিনের ছেলে নজমুল হক (৬৫) ও একই এলাকার ছলেমান বসু মিয়ার ছেলে আমিনুল ইসলাম (৪৮)।
চিরিরবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) বজলুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপ লাইনের ওই স্থানে প্রায় ৬ ফুট গর্ত করে দেখা হয়েছে। ৬ ফুট নিচে মুল পাইপলাইন ফুটো করে তাতে স্ক্রু লাগিয়ে বিশেষ কায়দায় অন্য একটি চিকন পাইপ লাগানো হয়েছে।
যেটা দিয়ে অল্প পরিমাণে তেল বের করে চোরেরা নিতে পারে। কিন্তু পাইপ লাইনে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে করে যেখানেই এই ধরনের সমস্যা হবে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের অভ্যন্তরে তা সিগন্যাল ( নির্দেশনা ) দেবে। তেল চুরি হচ্ছে বিষয়টি মেশিনের সাহায্যে বুঝতে পারে ভারতীয় প্রকৌশলীরা। পরে তারা বিষয়টি পার্বতীপুর ডিপোতে জানান। সেখান থেকে চিরিরবন্দর থানাকে জানানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানটি চিহ্নিত করে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ওই জমির মালিক, জমিতে সেচ দেওয়া শ্যালো ইঞ্জিনচালিত মেশিনের মালিক, প্রতিষ্ঠানের দুইজন লাইনম্যানকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পেনাল কোড ১৮৬০-এর ৩৭৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর-২৬/৩৭৫ তারিখ - ২৪-১১-২০২৩ বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
জানা গেছে , খরচ এবং সময় কমাতে ভারত থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য এই পাইপলাইনটি নির্মাণ করা হয়। গত ১৮ মার্চ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি পাইলাইনে তেল আমদানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ভারতের শিলিগুড়ির নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে শুরু হওয়া ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপ লাইন শেষ হয়েছে দিনাজপুরের পার্বতীপুর বিপিসি রেলহেড ডিপোতে। এই পাইপলাইনটি বাংলাদেশ অংশের পরিমাণ ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার এবং ভারত অংশে ৫ কিলোমিটার ।