রনজিৎ বর্মন, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :
বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার হরিশখালিতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগিতায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী, স্থানীয় সরকার , যুব সংগঠন কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম(এসএসএসটি) ও উপকূলীয় শিক্ষা বৈচিত্র্য উন্নয়ন সংস্থা (সিডিও) জলবায়ু সংকটে উপকূলীয় এলাকায় নিরাপদ পানির দাবীতে খালি কলস নিয়ে প্রতিকি কলসবন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে শ্যামনগরে নানা মুখী দূর্ভোগের সীমা নেই। এলাকাবাসী প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে মোকাবিলা করে টিকে থাকে। এর মধ্যে বর্ষা মৌসুমের পরবর্তীকালীন সময়ে শুরু হয়ে যায় স্বাদু পানির চরম সংকট। এলাকাবাসীকে পোহাতে হয় আরেক দুর্বিসহ দুর্ভোগ। দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চারদিক লবণ পানি দ্বারা বেষ্টিত। পান করার উপযোগী না হলেও অনেকটা বাধ্য হয়ে এলাকার অনেকে মৃদু লবণ পানি পান করে থাকে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে তাদের নানা ধরনের পানি বাহিত রোগে ভুগতে হয়।আমাদের এলাকাতে তীব্র পানীয় সংকটে ভোগে সকলে। এর মধ্যে নারী ও শিশুরা বেশি সমস্যায় ভোগে। নারীরা জানান, আমাদের অনেক দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। দস্তার কলসে দূর থেকে এই পানি সংগ্রহ করার ফলে আমরা কোমরে ব্যাথা, মাজার হাড় ক্ষয়ে যাওয়া,কিডনির সমস্যাসহ অনেক রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকি। এছাড়া অনেক সময় কিশোরী মেয়েদের ইভটিজিং এর স্বীকার হতে হয়।
তারা আরো বলেন, পানি কোন পন্য নয় এটি আমাদের নায্য অধিকার ।এলাকার নারীদের পড়তে হয় চরম বিপর্যয়ে। তাদের গোসল থেকে শুরু করে ব্যবহার্য পানির সকল ক্ষেত্রে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। অতি লবনাক্ত পানির ব্যবহারের ফলে শিশু ও নারীদের চর্মরোগ,স্ক্রীন কালো হওয়া, নারীদের গর্ভপাত, অপরিপক্ক সন্তান জন্ম, প্রতিবন্ধী সন্তান জন্মসহ জরায়ু সংক্রান্ত সমস্যা এবং নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হতে হয়। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আমরা যে প্রতিক’ল পরিবেশে টিকে আছি এটা আমাদের কাম্য নয়। নিরাপদ পানি আমাদের প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার। তবে আমরা কেন এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হই। আমরা এই দূর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।
এসময় বারসিকের মনন্ঞ্জয় মন্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মহিলা ইউপি সদস্য ফরিদা খাতুন, আজমুননাহার বেগম, কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্কের রাইসুল ইসলাম সিডিও ইয়থ টিমের সদস্য শাহিন হোসেন, এসএসএসটি যুব টিমের মো: সাইদুল ইসলাম,বারসিকর বরষা গাইন, লিপিকা গাইন, মুকুন্দ ঘোষ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী প্রমুখ।