বিএনপির ডাকা হরতালের দিন সকালে গাজীপুরের কাশিমপুরের জিরানী বাজার এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, হরতাল সমর্থনকারীরা এ আগুন দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ী কাশিপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা কালিয়াকৈর নবীনগর সড়কের জিরানী বাজার এলাকায় ঢাকাগামী বাসে আগুন দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ সময় বাসে অল্প কয়েকজন যাত্রী ছিল। আগুনে বাসের সামনের অংশ পুড়ে গেছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।
গেল ২৮ অক্টোবর বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের পর থেকে গত এক মাসে আগুন দিয়ে ২২৮টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, বাস-ট্রাক-ট্রেনসহ আগুন দেওয়া হয় ২১৭টি যানবাহন ও ১১টি স্থাপনায়। এ সময় পুলিশসহ নিহত হন চার জন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। তথ্য-বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম দিকের তুলনায় শেষের দিকে সহিংসতার ঘটনা ধীরে ধীরে কমে আসে।
২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড ও পুলিশের সাথে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার শুরুর পর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসে শুক্র, শনি ও মঙ্গলবার ছাড়া টানা অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর ঘটেছে যানবাহনে আগুনসহ নানা রাজনৈতিক সহিংসতা।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, এক মাসের রাজনৈতিক সহিংসতায় পুড়েছে ১৩৫টি বাস, ৩৭টি ট্রাক, ১৬টি কাভার্ড ভ্যান, আটটি মোটরসাইকেল, তিনটি ট্রেন, তিনটি মাইক্রোবাস এবং একটি করে পিক আপ, অটোরিকশা ও লেগুনা। এ ছাড়া আগুন দেওয়া হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ১০টিসহ মোট ২১৭টি যানবাহনে।
এ ছাড়া এক মাসে আওয়ামী লীগ অফিস, বিএনপি অফিস, পুলিশ বক্স, কাউন্সিলর অফিস, বিদ্যুৎ অফিস, বাস কাউন্টার ও দোকান-শোরুমসহ ১১টি স্থাপনায়ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গত এক মাসে আগুন ও সহিংসতায় নিহত হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট চার জন। এ সময়ে পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত হন অন্তত ১৫০ জন।