লালপুর (নাটোর) প্রতিদিন:
নাটোরের লালপুর উপজেলার আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনে বিনামূল্যে প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে এক বেলার খাবার। যার শুরুটা হয়েছিল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে। এর আয়োজক লাভলী ফাউন্ডেশন। সম্প্রতি এ প্রজেক্টের ৫০ দিন পূর্ণ হয়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মুখে এই ফাউন্ডেশনটি হাসি ফুটিয়েছে।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজিমনগর স্টেশনের পাশে কড়াইতলায় রান্নার বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে খাবার পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশে অপেক্ষায় রয়েছে ছোট থেকে বৃদ্ধ বিভিন্ন বয়সের শতাধিক অসহায়, দরিদ্র ও ভাসমান মানুষ।
এসময় কথা হয় ষাটোর্ধ বৃদ্ধা কমেলা বেগম ও রওশন আরার সঙ্গে। তারা জানান, প্রতিদিন তার নাতনীকে নিয়ে দুপুরের খাবার খেতে আসেন। প্রতিদিনই খাবার তালিকায় থাকে মাছ, মাংস, ডিম। এমন উন্নতমানের খাবার খেয়ে খুশি তিনি।
আরেকজন জাবেদ মন্ডল, পেশায় ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী। গ্রাম ঘুরে বিভিন্ন ভাঙা জিনিসপাতি কেনেন। ২মাস আগে দুপুরে না খেয়ে একবারে সন্ধ্যায় গিয়ে পেট পুরে ভাত খেতেন। লোকমুখে বিনামূল্য খাবারের কথা শুনে এখন দুপুর হলেই চলে আসেন এখানে খাবার খেতে।
আয়োজকরা জানান, ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান সিলভিয়া পারভীন লেনির উদ্যোগে কল্যাণমূলক এই কাজে যুক্ত রয়েছে এক ঝাঁক তরুণ সেচ্ছাসেবক। তারা সম্পন্ন বিনা পারিশ্রমিকে এই প্রজেক্টে শ্রম দিচ্ছেন। প্রথমে শতাধিক হতদরিদ্র মানুষের খাবার আয়োজন করলেও এখন ধীরে ধীরে সেটা আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় বৃদ্ধি করা হয়েছে তিনশ জনে।
এবিষয়ে লাভলী ফাউন্ডেশনটির ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা পথে অনেক ক্ষুধার্ত মানুষকে দেখি। ওরা এক বেলা খাবারের জন্য সবার কাছে হাত পাতে। তখন সিলভিয়া পারভীন লেনির উদ্যোগে মূলত ক্ষুধার্ত ভাসমান মানুষের জন্য এআয়োজন হয়। লোকমুখে বিনামূল্য খাবার পাওয়ার বিষয়টি চারেদিকে ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের এলাকারও নিম্নবৃত্ত বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও এখানে দুপুরের খাবার খেতে আসেন। বিনামূল্য খাবার পেয়ে তারাও খুশি। আমরাও চেষ্ঠা করি তাদের সাধ্যমত আপ্যয়ন করতে। বিত্তশালীদের আরও সহযোগিতা পেলে এইপ্রকল্পটি চালিয়ে নেওয়া সহজ হবে। শুধু এই বেলার খাবার নয়, বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় এমন কাযক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া প্রতি ঈদে ঈদ সামগ্রী, শীতবস্ত্র বিতরণ, কর্মসংস্থান সৃস্টি করাসহ বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক কাযক্রম চলমান রয়েছে।