অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় জিতে নিল ভারত। শুক্রবার রায়পুরে চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারিয়ে দিল তারা। সিরিজ়ে এগিয়ে গেল ৩-১ ব্যবধানে। শেষ দিকে ভারতের নিয়ন্ত্রিত বোলিং খেলতে পারলেন না অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারেরা। ব্যাটে রিঙ্কু সিংহ এবং বলে অক্ষর পটেলের কাছে হার অস্ট্রেলিয়ার। রবিবার বেঙ্গালুরুতে শেষ ম্যাচ। তবে এখন সেই ম্যাচ গুরুত্বহীন। আগে ব্যাট করে ১৭৪-৯ তুলেছিল ভারত। জবাবে ১৫৪ রানে থেমে গেল অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
রায়পুরে ভারতের স্কোর গড় স্কোরের থেকে সামান্য বেশি উঠেছিল। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রিঙ্কুর আউট হওয়া এবং শেষ দিকে একের পর এক উইকেট পড়তে থাকার কারণে বেশি রান ওঠেনি। কিন্তু বল হাতে তা পুষিয়ে দিল ভারত। অক্ষর পটেল ৩ উইকেট নিলেন। দীপক চাহার ২টি, রবি বিষ্ণোই এবং আবেশ খান ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
টসে জিতে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন। দলে চারটি বদল আনেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের জায়গায় প্রথম একাদশে ফেরেন মুকেশ কুমার। শ্রেয়সের এই ম্যাচ থেকেই খেলার কথা ছিল। তিনি আসেন তিলক বর্মার জায়গায়। আরশদীপ সিংহের জায়গায় আসেন দীপক চাহার। জিতেশ শর্মা আসেন ঈশান কিশনের জায়গায়। অন্য দিকে, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক হল ক্রিস গ্রিনের। তারা পাঁচটি বদল করে। মার্কাস স্টোইনিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জস ইংলিস, ঝে রিচার্ডসন এবং নাথান এলিস খেলেননি।
শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। অ্যারন হার্ডির প্রথম ওভারে মেডেন হয়। শেষ বলে যশস্বীর আউট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু ডিআরএসে বেঁচে যান তিনি। লেগ বাইয়ে এক রান হয়। পরের ওভারে জেসন বেহরেনডর্ফকে দু’টি চার মেরে ১১ রান নেন যশস্বী। তার পরের ওভারে নবাগত বেন ডোয়ারশুইসকে তিনটি চার মারেন। ষষ্ঠ ওভারে ওপেনিং জুটিতে ভারতের ৫০ হয়ে যায়। এর পরেই হার্ডির বলে ফিরে যান যশস্বী। ২৮ বলে ৩৭ করেন ভারতের ওপেনার।
তিনে নামেন শ্রেয়স। কিন্তু জাতীয় দলের প্রত্যাবর্তনটা ভাল হল না। অষ্টম ওভারেই তনবীর সাঙ্ঘার বলে গ্রিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। অষ্টম ওভারে সূর্যকে তুলে নেন বেন। ১ রানেই আউট ভারতের অধিনায়ক। পর পর তিনটি উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল ভারত। সেই চাপ কাটিয়ে দেন রিঙ্কু। সঙ্গী হন রুতুরাজ। দু’জনে মিলে চতুর্থ উইকেটে ৪৮ রান তুলে দেন। এর পর সাঙ্ঘা ফেরান রুতুরাজকে (৩২)। নবাগত জিতেশ যোগ দেন রিঙ্কুর সঙ্গে।
তবে ভারতের রানের গতি তখন এতটাই কম ছিল যে বড় রান উঠবে কি না, সেটা বোঝা যাচ্ছিল না। চাপ কাটিয়ে দেন রিঙ্কু এবং জিতেশ। সাধারণত ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাট করতে আসেন রিঙ্কু। কিন্তু চাপের মুখে পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ব্যাট করলেন কেকেআরের ক্রিকেটার। তিনি এবং জিতেশ পঞ্চম উইকেটে পঞ্চাশের উপরে রান তোলেন। ১৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান জিতেশ। রিঙ্কু আউট হন ৪৬ রান করে। রিঙ্কু ফিরতেই পর পর ভারতের উইকেট পড়তে থাকে। সে কারণে শেষ দু’ওভারে বেশি রান হয়নি।
অস্ট্রেলিয়া শুরুটা খারাপ করেনি। প্রথম দু’ওভারে ১৮ রান ওঠার পর তৃতীয় ওভারে চাহারকে মেরে ২২ রান নেন ট্রেভিস হেড। চারটি চার এবং একটি ছয় মারেন তিনি। বাধ্য হয়ে চতুর্থ ওভারে বিষ্ণোইকে আনেন সূর্য। প্রথম বলেই জশ ফিলিপেকে ফেরান তরুণ স্পিনার। পঞ্চম ওভারে অক্ষর পটেলের বলে তুলে মারতে গিয়ে ফেরেন হেডও (৩১)। পর পর দুই ওপেনার ফেরায় ভারত ম্যাচে ফিরে আসে। বেন ম্যাকডারমট (১৯) এবং হার্ডিও (৮) বেশি রান করতে পারেননি। ৮৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
সেখান থেকে ম্যাচ কেড়ে নেওয়ার উপক্রম হয়েছিল টিম ডেভিড এবং ম্যাথু শর্টের ব্যাটে। দুই ব্যাটারকেই পর পর ফিরিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন চাহার। ওয়েড শেষ পর্যন্ত ৩৬ রানে অপরাজিত থাকলেও দলকে জেতাতে পারেননি। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৩১ রান। কিন্তু আবেশ খানের সেই ওভারে ১০ রানের বেশি ওঠেনি।