জুবায়ের আহমেদ, টাঙ্গাইল, প্রতিনিধি :
এমপি হওয়ার আশায় গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করা ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডুর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ভোটার তার টিপসই দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
শনিবার (২ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনে যাচাই-বাছাই শেষে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কায়ছারুল ইসলাম।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকতার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু টাঙ্গাইল-২ আসনে নির্বাচনের জন্য আসনের এক শতাংশ ভোটারের নাম পরিচয় ও স্বাক্ষরসহ আবেদনপত্র নির্বাচন অফিসে জমা দেন। এসময় তার নিকট আত্মীয় ভূঞাপুর উপজেলার মাদারিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের আরফান আলী শেখের টিপসই নেওয়া হয়। পরবর্তীতে নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়া ভোটারদের মধ্য থেকে দশজনের নাম যাচাই-বাছাই করে। এতে নয়জন স্বাক্ষর করার কথা স্বীকার করলেও আরফান আলী অস্বীকার করেন। ফলেন তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
সাধারণত আইন অনুসারে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করতে চাইলে তাকে সংশ্লিষ্ট আসনের এক শতাংশ ভোটারের নাম পরিচয়সহ সই আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হয়। সেখান থেকে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তা দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০ জন ভোটারের অবস্থান যাচাই করেন। সংশ্লিষ্ট আসনে উক্ত ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত হলে মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়। অন্যথায় বাতিল বলে গণ্য হয়।
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু বলেন, ওই ব্যক্তি স্বাক্ষর দেওয়ার পর অস্বীকার করছেন। তবে তার বাড়িতে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আমি আপিল করব।
আরফান আলী শেখ বলেন, আমরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। অনেক সময় বিভিন্ন সরকারি সহায়তার জন্য আইডি কার্ড অনেকেই নেয়। আমিতো স্বাক্ষর পারি টিপসইতো দেইনি। গতকাল (১ ডিসেম্বর) বাড়িতে
পুলিশ গিয়েছিল। পরে তারা আমাকে ইউএনও অফিসে নিয়ে গিয়ে জানতে চায় টিপসই আমার কিনা। পরে আমি তাদের বলি এটা আমার টিপসই না।
জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডুর আবেদনে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর করে জমা দিয়েছেন। সেখান থেকে ১০ ভোটারের স্বাক্ষর ও তথ্য যাচাই বাছাই করার জন্য অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সেখানে ৯টি ভোটারের তথ্য সঠিক পাওয়া যায়। একটি ভোটারের তথ্য সঠিক পাওয়া যায়নি। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থন যাচাই-বাচাই বিধিমালা ২০১১ এর ৫ বিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। পরে আইন অনুযায়ী তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়। তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের তিন বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তিনি টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসন থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের আশায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের বরাবর আবেদন করেন। পরে ৩ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করেন।