ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এক আলোচনা সভায় আপ্যায়নের জন্য রান্না করা দুই হাড়ি খিচুড়ি মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানে মুনসুর মুন্সির বিরুদ্ধে। এ সময় নেতাকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগও করা হয়।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে চেয়ারম্যান মুনসুর মুন্সির ভাষ্য- নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এ ঘটনার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর মুন্সিসহ তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ মাতুব্বর। ওই রাতেই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ মাতুব্বর ফরিদপুর-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহর সমর্থক, অপরদিকে ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুনসুর মুন্সি স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক।
ঘারুয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ মাতুব্বরের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে তার বাড়ির উঠানে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের আপ্যায়নের জন্য দুই হাড়ি খিচুড়ি রান্না করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আলোচনার এক পর্যায়ে ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল যোগে তার প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান মুনসুর মুন্সি, বাহার হাওলাদার, মনির হাওলাদার, মজিবুর মুন্সি, কবির মুন্সিসহ অজ্ঞাত আরও ২০ জন লোক আলোচনা সভায় উপস্থিত হন।
এ সময় আলোচনা সভার উঠানের পাশে মোটরসাইকেলগুলো অতিরিক্ত হর্ণ বাজিয়ে শক্তির মহড়া এবং ক্ষমতা প্রদর্শনসহ ত্রাস সৃষ্টির জন্য ভয়ভীতি দেখায়। পরে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বিজয় দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্যে রান্না করা খিচুড়ি মাটিতে ফেলে নষ্ট করেন চেয়ারম্যানের লোকজন। পরে আলোচনা সভা দ্রুত বন্ধ করে সবাইকে উঠান ত্যাগ করতে বলা হয়, না হলে সবাইকে জখমের হুমকি দেন ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা। এতে উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাধারণ নারী-পুরুষ ভয়ে ছোটাছুটি করে সভাস্থল থেকে অন্যত্র পালিয়ে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক বলে পরিচিত অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর মুন্সি সাংবাদিকদের জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনা তার এলাকায় ঘটেনি। তার বিরুদ্ধে নৌকার সমর্থক কাজী জাফর উল্লাহর নেতাকর্মীরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
প্রত্যক্ষদর্শী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন জানান, তারা ফিরোজ মাতুব্বরের বাড়ির উঠানে আলোচনা সভা করছিলেন। এ সময় অনেকগুলো মোটরসাইকেলে করে এসে ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর মুন্সি ও তার সহযোগীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে সভাস্থল থেকে দ্রুত সরে যেতে বলেন। তা না হলে, উপস্থিত সবাইকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয় তারা। হুমকি দেওয়ার পর চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের আপ্যায়নের জন্য রান্না করা প্রায় দুই ড্যাক খিচুড়ি মাটিতে ফেলে নষ্ট করেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ এম এ জলিল জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।