বাতিল হওয়া প্রার্থিতা হাই কোর্টে গিয়ে ফিরে পেয়েছেন বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী, আওয়ামী লীগ নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
তবে উচ্চ আদালতে গিয়েও ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক এবং বরিশাল-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী শাম্মী আহমেদের কপাল খোলেনি।
সোমবার বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে।
দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা রিট আবেদন শুনে আদালত এ আদেশ দেয়। সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
বরিশালের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ দলের মনোনয়ন না পেয়ে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। গত ১৫ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ তুলে তার মনোনয়ন বাতিল চেয়ে পরে ইসিতে আপিল করেন ওই আসনের নৌকার প্রার্থী পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম। শুনানি শেষে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে কমিশন।
অন্যদিকে জাহিদ ফারুক মামলার বিষয়ে তথ্য গোপন করেছেন অভিযোগ তুলে তার প্রার্থিতা বাতিলের আপিল করেছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহ। সেই আপিল নির্বাচন কমিশনে নামঞ্জুর করা হয়। ফলে জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বহাল থাকে।
ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত শামীম হক এবং বরিশাল-৪ আসনের একই দলের মনোনীত শাম্মী আহমেদের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে হাই কোর্ট।
সোমবার বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ তাদের রিট আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেয়।
শামীম হকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা ও অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।
তার প্রতিপক্ষ প্রার্থী এ একে আজাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান খান ও অ্যাডভোকেট তানজীবুল আলম।
গত ১৫ ডিসেম্বর শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন শামীম হক।
তার প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেছিলেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। তার অভিযোগ ছিল, শামীম নেদারল্যান্ডসের নাগরিক।
অন্যদিকে এ কে আজাদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে শামীমও পাল্টা অভিযোগ করেছিলেন ইসিতে। তার দাবি, আজাদ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে আজাদের প্রার্থিতা টিকে গেলেও শামীমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এরপর তিনি হাই কোর্টে আসেন।
এদিকে, বরিশাল-৪ আসনের প্রার্থী শাম্মীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। গত ১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল হয় আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীর।
এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন শাম্মী। পাশাপাশি তথ্য গোপনের অভিযোগে ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী, আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে পঙ্কজের প্রার্থিতা টিকে গেলেও দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে শাম্মীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। এরপর তিনি হাই কোর্টে এসেও নিজের পক্ষে রায় পেলেন না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ৭ জানুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ।