ইয়ানূর রহমান, যশোর প্রতিনিধি :
যশোরের চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে র্যাব ৬ সিপিসি ৩ যশোরের সদস্যরা। সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত অভিযানের সময় ওই এলাকার একটি বাড়ি কন্ডোন করে একজনকে
জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তবে অবৈধ অস্ত্র দখলে রাখার অভিযোগে অভিযান চললেও ওই বাড়িতে অভিযুক্তের কাছে অস্ত্র মেলিনি। অস্ত্রটি অন্য এক ব্যক্তি তার কাছে রাখলেও পরে নিয়ে গেছে বলে তথ্য মিলেছে। এ ঘটনায় অস্ত্র নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকেও খোঁজা
হচ্ছে র্যাবের পক্ষে।
এদিকে, অভিযানের সময় জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে প্রেসক্লাব যশোরে এসে অভিযোগ করেছেন চাঁচড়ার ইউনুস আলী। যদিও র্যাবের পক্ষে কোম্পানি কমান্ডার মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তথ্য মিলেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে র্যাব। এর অংশ হিসেবে ২৪ ডিসেম্বর র্যাব ৬ সিপিসি ৩ যশোর কোম্পানির একটি টিম চাঁচড়া এলাকায়
অভিযান পরিচালনা করে। গোপন খবর ছিল, চাঁচড়া সার গোডাউন এলাকার আবুল কাশেমের ভাড়টিয়া শাহাদৎ মোল্লার ছেলে ইউনুস আলীর দখলে একটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র আছে। ওই খবরে বিকেল আনুমানিক সড়ে ৩ টার দিকে অভিযান
পরিচালনা করে ওই টিম। অস্ত্রের খোঁজে অভিযান পরিচালনার সময় ইউনুসকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপরও অস্ত্র মেলেনি ওই ঘর থেকে কিংবা তার কাছ থেকে। অস্ত্র অন্য হাতে চলে গেছে এমন তথ্য মেলে। ঘন্টা দুয়েক পরে
ইউনুসকে রেখে র্যাবের টিম চলে যায়। ওই অভিযানের ব্যাপারে ওই দিন সন্ধ্যায় বা রাতে র্যাব মিডিয়াকে কিছু না জানালেও ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এসে র্যাবের অভিযানিক টিমকে ঘিরে মারপিটের অভিযোগ
তোলেন ইউনুস আলী।
তিনি জানান, অস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তার মুখ বেধে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে। তিনি একজন রিকসা চালক। অথচ তার কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে বলে অস্ত্র বের করতে বলা হয়েছে। নির্যাতন চালিয়ে অস্ত্রের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি নেয়ার চষ্টা করা হয়েছে। চাঁচড়া এলাকার মামুন নামে একজন র্যাবের ওই টিমকে সাথে নিয়ে বাড়িতে ঢোকে। ইউনুসের আদি বাড়ি গোপালগঞ্জ মকছেদপুরের টেংরা শারমনি গ্রামে।
কান্না বিজড়িত কণ্ঠে জানান, রিকসা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। সময় পেলে একটু আধটু দল করেন। সৎভাবে চলেন তিনি। অথচ কারো ইন্ধনে তার বাড়িতে র্যাব গিয়ে নির্যাতন করেছে। অস্ত্র বের করে দেয়ার জন্য তার মায়ের কাছে দুই
ঘন্টার সময় দিয়ে গেছে।
এদিকে, সোমবার এ অভিযান ও ইউনুস আলীর অভিযোগের ব্যাপারে র্যাব ৬ সিপিসি ৩ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালনো হচ্ছে। এর অংশ
হিসেবে গোপন খবরে চাঁচড়ায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই বাড়িতে ইউনুস আলীর দখলে অস্ত্র আছে এমন তথ্যে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে সে অস্বীকার করলেও পরে সে স্বীকার করে তার কাছে একজন অস্ত্র রেখেছিল। তবে
পরে এসে সে ওটা নিয়ে গেছে। সে একজনের নামও বলে, যাকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইউনুস আলীর কাছে অস্ত্র পাওয়া না যাওয়ায় তাকে আটক করা হয়নি। তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয় তাকে। তবে তার উপর নির্যাতন ও মারপিট চালানো
হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য নয়। অভিযানের সময় মারপিটের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। র্যাব সদস্যরা তাকে মারপিট করেনি।