ইবি প্রতিনিধি :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষায় নেকাব না খোলার কারণে ভাইবায় অংশ নিতে পারে নি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তুবা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ১৩ ডিসেম্বর ফার্স্ট ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভা বোর্ডে আগের মতোই নেকাব পরিধান করে তিনি। এসময়ে ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত শিক্ষক-রা তাকে নেকাব খুলে মুখমন্ডল প্রদর্শন করেতে বললে ভুক্তভোগী অস্বীকৃতি জানালে পরবর্তীতে ভাইভা নেওয়া হয়না তার। চিহ্নিতকরণের জন্য নারী শিক্ষক দিয়ে সনাক্ত করতে বলেলেও সিন্ধান্তে অনড় থাকে ভাইভা বোর্ড।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ভাইভা বোর্ডে তাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান থেকে একাধিকবার বোঝানো হয়েছে। প্রথম দফায় প্রায় ২৫ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় এসেও সে নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানায়৷ পরবর্তীতে আমরা তার বাবাকেও ইনফর্ম করি, তিনি তার সন্তানকে আরেকটি সুযোগ দিতে বলেন। সে অনুযায়ী ক্যাম্পাস খোলার পর ১৭ জানুয়ারি সে ৩ জন বান্ধবী নিয়ে ভাইভা দিতে এলেও পরিচয় সনাক্তে অস্বীকৃতি জানায়। সেদিনও সে চাইলে ভাইভা দিতে পারতো কিন্তু সে রাজি না হওয়ায় তার ভাইভা নেওয়া হয়নি।
বিভাগের সভাপতি শিমুল রায় বলেন, রেজাল্ট দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার ভাইভা দেওয়ার সুযোগ থাকবে। আমাদের উদ্দেশ্য কখনোই তার নেকাব খোলানো ছিল না। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল তাকে স্টুডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা।
উক্ত বিভাগের শিক্ষক উম্মে সালমা লুনা বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা তো ভর্তি পরীক্ষায় মুখ, কান খুলেই পরীক্ষা দিয়েছেন। আমাদের ক্লাসরুমেও অনেক শিক্ষার্থী নেকাব করেন, আমরা কখনোই তাদের বিরূপ কিছু বলি না। এখন, ভাইভার দিন ওই শিক্ষার্থীকে দুই দফায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বোঝানো হয়েছে। কিন্তু সে রাজি হয়নি।
ফিমেল টিচার দিয়ে সনাক্তকরণের প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রশাসন কাছ থেকে এমন লিখিত কোন নির্দেশনা পায়নি। প্রশাসন যদি এব্যাপারে কোন নির্দেশনা দেয় তবে আমরা অবশ্যই তা পালন করবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিন বলেন, মানুষ ধর্ম কর্ম করবে আমরা সেখানে বাধা দিবো না। তবে যে-কোনো ফ্যাকাল্টি ই হোক না কেনো তাকে ভাইভায় সনাক্ত করার ব্যবস্থায় আসতে হবে।অনেকে আছে যারা ফিমেল টিচার ছাড়া করতে চায় না সেক্ষেত্রে ফিমেল টিচারকে দিয়ে করানো হবে।
যদি বোর্ডে ফিমেল টিচার না থাকে সেক্ষেত্রে জানতে চাইলে বলেন, সেজন্য বিকল্প ব্যবস্থা আছে। তার বান্ধবীরা থাকবে বা কোনো ম্যামকে এনে তা করা যাবে। এইজন্য যে আমরা পরীক্ষা নিবো না বা পরীক্ষা নেয়া যাবে না এমন না বিষয়টা।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এই কাজটি উচিত হয়নি। আমাদের সামনেও অনেক সময় এরকম শিক্ষার্থীরা থাকে আমরা সবসময়ই নারী শিক্ষকের মাধমে তাদের আইডেনটিফাই করেছি। ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে গেলে তাদের পেনাল্টি হতে পারে।