প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
দ্বিতীয় ধাপে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে মৃদু শৈত্য প্রবাহ প্রকট ধারন করেছে। মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারী) সকাল ৯টায় কুড়িগ্রাম অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮দশমিক ৪ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত ২ সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রী থেকে ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠানামা করছে।
জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর নিচে থাকায় সোমবারও(২২জানুয়ারী) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে বেশ কিছু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ খোলা রেখেছে। ফলে কমলমতি ছেলে মেয়েরা কিছুটা বাধ্য হয়েই কাকডাকা ভোরেই প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করছে। এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি হওয়ায় দৃষ্টি দিচ্ছে না প্রশাসন।
প্রচন্ড ঠান্ডায় এ অঞ্চলের মানুষ জবুথুবু হয়ে পড়েছে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় ধাপে শৈত প্রবাহে মানুষ নাকাল হয়ে পড়েছে।এ অঞ্চলে আবারও দুইদিন ধরে সূর্য্যরে মুখ দেখা যায় না। সারাদিনেই কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে। অসহায় মানুষরা শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় খুঁজলেও পাচ্ছে না। এবারে দুই দফা শৈত প্রবাহ হলেও সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণে তেমন সাড়া দিচ্ছে না। ফলে অসহায় দুঃস্থ মানুষরা পড়েছে চরম বিপাকে। সরকারি ভাবে মাত্র ৫থেকে ৬হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে। তাই অনেকে একটু উষ্ণতা নিতে খড়কুটো জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিচ্ছে।
রাজারহাট সদর ইউনিয়নের ভ্যান চালক সাহেব আলী বলেন, ‘এবারেই সবচেয়ে বেশী দিন ঠান্ডা এবং শীত। দুই সপ্তাহ হয়া গ্যালো তবু ঠান্ডা গেল না। কাজ কাম তো দুরের কথা মানুষ ঘর থাকি বাইরে বেড়াতে পারছে না। ঠান্ডায় কিছুক্ষণ ভ্যান নিয়া বেড়ালে হাত পাও শিষ্টা নাগে।’
প্রচন্ড ঠান্ডা ও শীতের কারণে গত দুই সপ্তাহে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়ে গেছে। স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করছে রোগীরা। তবে চিকিৎসা সেবায় কোন ওষুধের ঘাটতি নেই বলে দাবী করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তবে রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারন করছে। হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিতে বাইরে অবস্থান করছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রব বলেন, জেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১০ডিগ্রীর নিচে থাকায় সোমবাও (২২জানুয়ারী) সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ম্যাসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, সোমবার(২২জানুয়ারী সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ রকম তাপমাত্রা আরও দুই একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী রায় বলেন, এ অঞ্চলে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৮দশমিক ৪ডিগ্রী সেলসিয়াস হওয়ায় শীতজনিত কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।