নাজমুল হাসান নিরব, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সদরপুরে পদ্মানদীর পাড়ের ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস নেই স্থানীয়দের। মাটি কাটার ফলে ফসলী জমি এখন খালের মত হয়ে গেছে এতে বর্ষা মৌসুমে নিশ্চিত নদী ভাঙনের কবলে পড়ার শংকায় রয়েছে আকোটেরচর ইউনিয়নের ছলেনামা গ্রামের প্রায় ৫০টি পরিবার।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আকটের চর এলাকার নতুন ছলেনামা গ্রামের পদ্মার পাড় থেকে রাতের আধারে এক্সেভেটর দিয়ে ফসলী জমির মাটি কেটে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মাটিকাটার প্রতিবাদ করার সাহস করছে না কেউ। স্থানীয়রা বলছেন, ভাটা মালিকরা কৃষকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে নদী পাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ২শ মিটারের মত জমি নদীভাঙনের মুখে পড়ে। এই মাটি কাটার ফলে বর্ষা মৌসুমে নিশ্চিত পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়বে ছলেনামা গ্রামসহ শত শত একর ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছলেনামা গ্রামের কয়েক জন জানায়, অবৈধ ভাবে মাটি ও বালু কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। পদ্মার পাড় থেকে রাতের আধারে প্রতিনিয়ত মাটি কাটে তারা। রতভর চলে তাদের কর্মযজ্ঞ। এভাবে চলতে থাকলে বর্ষায় আমাদের ভিটে-মাটি হারিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
তারা জানান (গ্রামবাসী), রাত ১১টায় তাদের মাটি কাটা শুরু হয় এবং ভোর রাতে এক্সেভেটর ও ট্রাক নিয়ে চলে যায়। উপজেলা প্রশাসন মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকারি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মাটি ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে আমরা সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থণা করছি।
গেলো বর্ষা মৌসুমেও সদরপুরের পদ্মা পাড়ের বিভিন্ন এলাকা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারিয়েছেন কয়েকশো পরিবার। আর এখন শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা পাড়ের মানুষের নতুন আতঙ্ক মাটি ব্যবসায়ীরা। পদ্মার ভাঙ্গন ও মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী জানান, আমরা নিয়মিত মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। পদ্মার পাড় থেকে রতের আধারে মাটি কাটার ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। পদ্মার চর দুর্গম এলাকা হওয়ায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অভিযানের পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছি।