গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিরাট রাজার ঢিবিতে প্রতœতাত্ত্বিক খনন কাজ পরিচালনা করছে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর। এ এলাকায় প্রথমবার খননে বেরিয়ে এসেছে বেশ কিছু অবকাঠামো। যেগুলো প্রাচীন ও মধ্যযুগের হতে পারে বলে ধারণা করছে খনন কাজে নিয়োজিত রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের প্রতœতাত্ত্বিক দল। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক এবং খনন দলের প্রধান ড. নাহিদ সুলতানা এ তথ্য জানান।
ঢিবিটির আকার ৫০ মিটার, প্রস্থ ৩৫ মিটার এবং উচ্চতা ৪ মিটার। এ ছাড়া এর আশপাশে আরও চারটি ঢিবি রয়েছে বলে জানা যায়। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর বিরাট রাজার ঢিবি খননকাজ শুরু করে গত বছর। খনন দলের আট সদস্য হলেন– ড. নাহিদ সুলতানা, ড. আহমেদ আবদুল্লাহ, রাজিয়া সুলতানা, হাবিবুর রহমান, এস এম হাসানাত বিন ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, তারিকুল ইসলাম ও উম্মে সালমা ইসা। এ ছাড়াও খনন কাজে রয়েছে ২০ শ্রমিক। ড. নাহিদ সুলতানা বলেন, খননে ধারণার চেয়ে বড় আকারের অবকাঠামো পাওয়া গেছে। এখানে পোড়ামাটির ভগ্নাংশ, পোড়ামাটির ফলক, অলঙ্কৃত ইট (সাধারণত ধর্মীয় উপাসনালয়ের সাজসজ্জায় ব্যবহৃত) এবং ভিত্তিপ্রস্তর পিলার পাওয়া যায়, যা প্রাচীনকালের সাক্ষ্য বহন করে। তবে নিদর্শনগুলো ঠিক কোন সময়ের এবং কারা এখানে বাস করতেন বা কাদের রাজ্য ছিল তা এখনই বলা সম্ভব নয়। জনশ্রুতি আছে, এখানে প্রাচীন একটি দুর্গ নগরী ছিল। দুর্গের নিরাপত্তার জন্য ছিল সুউচ্চ প্রাচীর। সেই প্রাচীরের বাইরে ছিল প্রশস্ত ও সুগভীর পরিখা। তবে খননকারী দল এখন পর্যন্ত প্রাচীন দুর্গ নগরীর কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, মূল অবকাঠামোর সঙ্গে আরও দুই থেকে তিনটি মন্দিরের সংযোগ সড়ক ছিল, যা ধ্বংসপ্রাপ্ত।
নাহিদ সুলতানা বলেন, প্রতœতত্ত্বস্থলটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে দর্শকের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। গবেষক খাজা এম এ কাইয়ুমের নোটবুকের তথ্যমতে, বিরাট রাজা পুরো ভারতবর্ষে মৎস্যরাজ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ অঞ্চলে মাছ চাষের জন্য তিনি ৯৯৯টি পুকুর খনন করেন।