ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টা পর শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩টি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্ররা ছয়টি, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) চারটি ও নওয়াজ শরীফের মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন) তিনটিতে জয় পেয়েছে।
তবে স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, প্রাথমিক গণনায় ১২৫ আসনে এগিয়ে রয়েছে পিটিআই সমর্থিতরা। অন্যদিকে ৪৪ আসনে এগিয়ে রয়েছেন নওয়াজের শরিফের দলের প্রার্থীরা। পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। নির্বাচনের আগে দুর্বৃত্তের গুলিতে এক প্রার্থী নিহত হওয়ায় একটি আসনে ভোট স্থগিত করা হয়েছিল আগেই। তাই ভোট হয়েছে ২৬৫ আসনে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের আগে তোষাখানা ও সাইফার মামলায় অর্থদণ্ডসহ কারাগারে প্রেরণ করা হয় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। একইসঙ্গে ১০ বছরের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে তাকে নিষিদ্ধ করেন আদালত। এছাড়া, নির্বাচনে প্রতীক হারায় তার দল পিটিআই। এরপরও নির্বাচন বর্জন না করে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছে ইমরান শিবিরের নেতারা।
এদিকে বিলম্বে ফল ঘোষণা শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) বিশেষ সচিব জাফর ইকবাল রয়টার্সকে বলেন, ‘ইন্টারনেট ইস্যুতে’ ফল ঘোষণায় বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া বিস্তারিতভাবে আর কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি।
এর আগে ভোট গ্রহণের দিনে পাকিস্তানজুড়ে বন্ধ রাখা হয়েছিল মুঠোফোন সেবা। দেশটির অনেক অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা কিংবা গতি কম থাকার খবরও জানা গিয়েছিল। মূলত নিরাপত্তার স্বার্থে এই উদ্যোগ নেয় দেশটির সরকার। তবে আজ পাকিস্তানে মুঠোফোন সেবা চালু রয়েছে।
কোনো দল এককভাবে সরকার গঠন করতে চাইলে এবার ১৩৪টি আসনে জিততে হবে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানে এবার কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও পেতে পারে।
গত নির্বাচনে জয়ী দল পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীদের সঙ্গে পিএমএল-এনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, এবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে থাকা নওয়াজকে সমর্থন দিচ্ছে পাকিস্তানে ক্ষমতাধর হিসেবে পরিচিত সামরিক বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮ টায় শুরু হওয়া ভোট চলে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্র দখলের পাশাপাশি গ্রেনেড হামলা হয়। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর ১০ জনসহ নিহত হন ১২ জন।