সাদিয়া আফরিন অমিন্তা, স্টাফ প্রতিনিধি:
আহা আজি এ বসন্তে/ এত ফুল ফোঁটে/ এত বাঁশি বাজে/ এত পাখি গায় - রবিঠাকুর হয়তো বসন্তের সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করেই এ গানের রচনা করেছিলেন। তার গানের উপমার মতোই বসন্তের ছোঁয়ায় প্রকৃতি যেন ভিন্ন রূপ ধারণ করে।
হাড় কাঁপানো শীতের প্রকোপে নিস্তেজ হয়ে পড়া প্রকৃতি বসন্তের আগমনে সাজে নতুন সাজে। শীতের রুক্ষতা মুছে প্রকৃতি হয়ে ওঠে সজীব-কোমল। পাতা ঝড়া কঙ্কাল মূর্তি গাছগুলো ফিরে পায় নতুন প্রাণ। গাছে গাছে ফুটে থাকে বাহারি সব ফুল।
প্রকৃতির কাছে কবি বেগম সুফিয়া কামাল শীতের বিদায়ি কবিতায় বলেছেন, হে কবি নীরব কেন, ফাগুন যে এসেছে ধরায়/ বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়/ কহিল সে সিগ্ধ আঁখি তুলি/ দখিণ দুয়ার গেছি খুলি?/বাতাবী লেবুর ফুল ফুটেছি কি? ফুটেছে কি আমের মুকুল?/ দখিণা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও এখন বাহারি সব ফুলের গন্ধে ব্যাকুল। রুক্ষতায় সবুজ ক্যাম্পাসের গাছগুলো কঙ্কালের ন্যায় ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল বহুদিন। বসন্তের আগমনে সেইসব গাছে নতুন কচি পাতা বের হওয়ায় গাছগুলো মুক্তি পেয়েছে তার মরণ দশা থেকে।
শীতের সমাপ্তির আভাস পেয়ে বইতে শুরু করেছে দক্ষিণা বাতাস। কোকিল তার গানের মাধ্যমে আগমনী বার্তা দিচ্ছে বসন্তের। ফুল তার সুবাস ছাড়াচ্ছে, বাতাসে এক মিষ্টি বসন্ত বসন্ত ঘ্রাণ।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ফ্যাকাসে-কে বিদায় জানিয়ে রঙিণকে আমন্ত্রণ করে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বসন্ত বরণের। বিভিন্ন সৌখিন আয়োজনের ধুম পড়ে গিয়েছে চারিদিকে, সবার মাঝে উৎসব উৎসব ঘ্রাণ। প্রকৃতির সঙ্গে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে নতুনের প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের আভাস দিচ্ছে প্রকৃতি ।
শীতের যৌবন শেষে ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্ত এসেছে প্রকৃতির দুয়ারে। বসন্তের আনুষ্ঠানিক বার্তা জানান দিতে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন- ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত ’। কবির লেখার বর্ণ ধরেই বলতে হয় ক্যাম্পাস ফিরে পেয়েছে তার সেই চিরচেনা রূপ। শুষ্ক এবং পাতা ঝড়া দিনের ইতি টেনে নতুন রূপে সেজে উঠেছে ইবি ক্যাম্পাস।