মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ১৫৮টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শহীদ মিনার নেই ১১১টিতে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশেষ দিবসে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। শুধু পুঁথিগত বিদ্যার বাহিরে ফেব্রুয়ারি মাসের মহান ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার স্থাপনের জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভিবকেরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানায়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বিরম্বনায় পরতে হয় তাদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক বরাদ্ধ না থাকায় শহীদিনার নির্মান সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, ৯৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৫টিতে নেই শহীদ মিনার। অপরদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, উপজেলায় ৮টি জেনারেল ও কারিগরি কলেজ, ১২টি মাদ্রাসা, ৪২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ মোট ৬২ টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ মিনার নেই ৩৬টি প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ম্যানিজিং কমিটির সদস্য সহ সংশ্লিষ্ট সদস্যদের উদাশীনতার কারনে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান হয়নি বলে মনে করছেন সুধীজনরা। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেগুলোও বছরের পর বছর পরে থাকে অযত্ন অবহেলায়।
গোন্দারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি মোঃ নাসির আহম্মেদ জনি জানান, অনেক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলেও আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের কলেজেও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হোক।
একই বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ ইস্রাফিল ও মাহিম বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে যদি শহীদ মিনার থাকত তাহলে আমরাও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারতাম।’
শহীদ মিনারের গুরুত্ব তুলে ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরী।
এ বিষয়ে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছিল। আমরা বরাদ্ধ ও নকশা তৈরি করে পাঠিয়েছি। স্থানীয় ভাবে কিছু প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেগুলোর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নকশা ও ডিজাইন করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু করনার কারনে সেটি স্থগিত হয়ে গিয়েছে। দ্রুতই সেকল স্কুলে শহীদ মিনার নেই সেগুলো নির্মাণ হয়ে যাবে।