রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর রেশ না কাটতেই এবার মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে আহনাফ তাহমিন আয়হাম (১০) নামের আরেক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
আহনাফের স্বজনদের অভিযোগ, মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন ডা. এস এম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার রাতে সন্তানকে সুন্নতে খতনা করাতে আসেন শিশু আয়হামের বাবা ফখরুল আলম ও মা খায়কুন নাহার চুমকি। রাত ৮টার দিকে খতনা করানোর জন্য অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর আর ঘুম ভাঙেনি আয়হামের। এর ঘণ্টাখানেক পর হাসপাতালটির পক্ষ থেকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শিশু আহনাফের মৃত্যু হওয়া জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল সেন্টারের লাইসেন্স থাকলেও হাসপাতাল পরিচালনার কোনো অনুমতি ছিল না। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের শুধু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন থাকলেও হাসপাতাল পরিচালনার অনুমোদন ছিল না। আমরা তাদের সব কার্যক্রম বাতিল করেছি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সও বাতিল করা হচ্ছে। এমন কাজের সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘আহনাফের মৃত্যুর কারণ কী ছিল?’- প্রশ্নের জবাবে ওই পরিচালক বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে কাউকে পাইনি, এ জন্য শিশুটির মৃত্যুর কারণ জানতে পারিনি। এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এক বিশেষ বিবৃতিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত। কিছুদিন আগেও এমন একটি ঘটনা আমরা লক্ষ্য করেছি। সে ঘটনায় আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থাও নিয়েছি। তবে সেই ঘটনার পরও যারা সতর্ক হতে পারে নি, এ রকম আর কারও কোনোরকম দায়িত্বে অবহেলা বা গাফিলতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। দোষী প্রমাণিত হলে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির বিরুদ্ধে শুধু কঠোর ব্যবস্থা নেওয়াই হবে না, ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলাকারী দোষীদেরও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে পরবর্তীতে আর কোনো প্রতিষ্ঠান এ রকম গুরুদায়িত্বে অবহেলা করতে সাহস না পায়। চিকিৎসায় অবহেলা পাওয়া গেলে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’