অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সাক্ষাৎ বিকেলে হওয়ার কথা রয়েছে৷ ২২ আগস্ট বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে তার
এরইমধ্যে বাংলাদেশে সৃষ্ট বন্যা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেন্টার থেকে এক বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারত কোনো বাঁধের মুখ খুলে দেয়নি বলে দাবি করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অতিরিক্ত পানির চাপে সেটি একা একাই খুলে গেছে বলে দাবি করেছে তারা। এ ঘটনার মধ্যে তারা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি বলা হয়, আমরা বাংলাদেশকে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেছি যে, ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেয়ায় পূর্ব সীমান্তের জেলাগুলোতে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। বাস্তবে এটি সঠিক নয়। আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।
এতে আরও বলা হয়, ডুম্বুর বাঁধটি সীমান্ত থেকে বেশ দূরে অবস্থিত - বাংলাদেশের ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি উজানে। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ, যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এবং একটি গ্রিডকে ফিড করে। এখান থেকে বাংলাদেশও ত্রিপুরা থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ টেনে নেয়।
প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীপথে আমাদের অমরপুর, সোনামুড়া এবং সোনামুড়া ২-এ তিনটি জলস্তর পর্যবেক্ষণ সাইট রয়েছে। সমগ্র ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের সংলগ্ন জেলাগুলোতে গত ২১ আগস্ট থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ভারি প্রবাহের কারণে নিজে থেকেই এসব এলাকা থেকে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অমরপুর স্টেশন একটি দ্বিপাক্ষিক প্রটোকলের অংশ, যার অধীনে আমরা বাংলাদেশে বন্যার রিয়েলটাইম তথ্য প্রেরণ করছি। তথ্য-উপাত্ত দেখাচ্ছে, ২১ আগস্ট দুপুর ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশে বন্যার রিয়েলটাইম তথ্য পাঠানো হয়েছে। তবে বন্যার ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় ৬টার দিকে যোগাযোগে সমস্যা হয়েছে। তবুও, আমরা জরুরি তথ্য সরবরাহের জন্য তৈরি অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা। এটি উভয় দেশের জনগণের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করে এবং এর সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। যেহেতু দুটি দেশ ৫৪টি অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী শেয়ার করে, তাই নদীর পানি সহযোগিতা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানি সম্পদ এবং নদীর পানিব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’